Use of Tongue and Hands

Abdullah bin Amr (RA) reported that the Messenger of Allah (ﷺ) said:
"A Muslim is one from whose tongue and hands other Muslims are safe, and a believer is one whom mankind have any protection for their lives and their properties."
(Sahih al-Bukhari)

বাংলা অর্থ:

আবদুল্লাহ ইবন ওমর (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
"প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। আর প্রকৃত মুমিন সে, যার মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতি তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা লাভ করে।"
(সহিহ আল-বুখারি)

এই হাদিসটি আমাদেরকে জবান ও হাতের ব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক করে, যাতে আমরা অন্যদের ক্ষতি না করি এবং সর্বদা ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হই।

মেডিকেল আইনবিজ্ঞান (Medical Jurisprudence) ও তার ভূমিকা

মেডিকেল আইনবিজ্ঞান হল এমন একটি শাখা যেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞান ও আইন একত্রে কাজ করে। এটি বিশেষ করে বিচারিক কার্যক্রম, অপরাধ তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মেডিকেল আইনবিজ্ঞানের ভূমিকা

১. অপরাধ তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রমে সহায়তা

সন্দেহজনক মৃত্যু, হত্যা, আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ও ফরেনসিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা হয়।

ধর্ষণ, নির্যাতন বা শারীরিক আঘাত সংক্রান্ত মামলায় মেডিকেল রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


২. চিকিৎসকদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব নির্ধারণ

ডাক্তারদের কীভাবে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হবে এবং আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা মেডিকেল আইনবিজ্ঞান ব্যাখ্যা করে।

চিকিৎসায় অবহেলা (Medical Negligence) ও ভুল চিকিৎসার (Malpractice) ক্ষেত্রে দায় নির্ধারণে সাহায্য করে।


৩. ফরেনসিক প্রমাণ ও মেডিকেল রিপোর্টের গুরুত্ব

ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে রক্ত, ডিএনএ, টক্সিকোলজি রিপোর্ট, আঘাতের ধরন ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়।

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতে মেডিকেল রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


৪. মানসিক স্বাস্থ্য ও আইন

একজন ব্যক্তি মানসিকভাবে সুস্থ কিনা, তিনি অপরাধ সংঘটনের সময় সুস্থ মস্তিষ্কে ছিলেন কিনা—এসব নির্ধারণে মেডিকেল আইনবিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ।

মানসিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রেও এটি ভূমিকা রাখে।


৫. মৃতদেহ ও অঙ্গ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইন

মৃতদেহ সংরক্ষণ, কবরস্থ করা বা দাহ করা, অঙ্গদানের নীতিমালা ইত্যাদিতে মেডিকেল আইনবিজ্ঞান ভূমিকা রাখে।

অবৈধ মানব অঙ্গ পাচার প্রতিরোধেও এটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে।


উপসংহার

মেডিকেল আইনবিজ্ঞান অপরাধ দমন, চিকিৎসা নীতি নির্ধারণ, চিকিৎসা সংক্রান্ত আইনি বিরোধ মীমাংসা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অপরিহার্য। এটি চিকিৎসক, আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ইনস্টিটিউটশনাল প্রাইড: অহেতুক অহংকার না আত্মসম্মানের দাবিদার?

বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে একধরনের অদৃশ্য প্রতিযোগিতা বিদ্যমান, যা ‘ইনস্টিটিউটশনাল প্রাইড’ নামক এক বিতর্কিত মনোভাবের জন্ম দিয়েছে। রাবির ন্যাশনাল ছাত্রদের গুণে না। রাবির সায়েন্স ফ্যাকাল্টির ছাত্ররা কলা ফ্যাকাল্টির ছাত্রদের দিকে নাক সিঁটকায়। ঢাবি রাবিকে তুচ্ছ মনে করে, আর বুয়েট তো ঢাবির প্রতিও তেমন সম্মান দেখায় না। কিন্তু, সত্যি বলতে, হার্ভার্ড কিংবা এমআইটি বুয়েটকে আদৌ চেনে কি?

এই অহেতুক গৌরববোধ বা ‘ইনস্টিটিউটশনাল প্রাইড’-এর ভিত্তি কী? প্রাইড আসে গবেষণা, উদ্ভাবন, আবিষ্কার, প্রকাশনা, পুরস্কার, এবং বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব দেখে। অথচ বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশই আন্তর্জাতিক মানে জ্ঞান ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো অবদান রাখতে পারেনি।

আমাদের চোখে ‘ইনস্টিটিউটশনাল প্রাইড’ মানে লাল বিল্ডিং, সাদা বিল্ডিং, বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাস, অপরাজিতা-কলমীলতার চা, গান, কনসার্ট, আর ক্যাম্পাসের হুডি পরিহিত স্মৃতি। এগুলো কি সত্যিকার অর্থে গৌরবের জায়গা হতে পারে? জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানগুলো কি জনগণের জন্য কোনো প্রোডাক্টিভ ভ্যালু তৈরি করতে পেরেছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দেখছি, এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আমলা হয়ে যায়, যা প্রকৃত অর্থে দেশের উন্নয়নে সরাসরি কোনো ভূমিকা রাখে না।

আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত জ্ঞান নির্মাণ ও উদ্ভাবন। অথচ এই দিকগুলোতে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। ফলস্বরূপ, ‘ইনস্টিটিউটশনাল প্রাইড’ কেবল এক অহেতুক অহংকারে পরিণত হয়েছে, যা আমাদের পা মাটিতে পড়তে দেয় না।

লজ্জা হওয়া উচিত আমাদের! তবু আমরা গর্বিত—কিছু না পারলেও আমরা ‘পিএইচডি করা'।